বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৫

eid -e- milad-un nabi | বিভিন্ন নবীদের যুগে ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) এর প্রমান ।

মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল আলী কাদেরী

কামিল (হাদিস, ফিক্হ) বি.এ (অর্নাস)

সহ -সুপার, কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া কামিল মাদরাসা (মহিলা শাখা)

নবীদের যুগে ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
১। হযরত আদম আলাইহিস সালাম’র মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন ঃ
হযরত আদম আলাইহিস সালাম কে সৃষ্টি করার পর যখন একাকী বেহেস্তের মধ্যে অবস্থান করেছেন, তখন তাঁর বাম পাজরের হাড় দিয়ে হযরত হাওয়া আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হল। হযরত হাওয়া আলাইহিস সালামকে দেখে হযরত আদম আলাইহিস সালাম সামনে অগ্রসর হতে চাইলে আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে নির্দেশ এল তাঁকে আক্বদ এবং মোহরানা ধার্যের পূর্বে স্পর্শ করতে পারবে না। অতঃপর আল্লাহ র হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘র মিলাদে পাকের মাধ্যমে আক্বদ সম্পন্ন করা হল। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘র উপর ১০ বার দরূদ শরীফ পাঠকে মোহরানা ধার্য করা হল। উক্ত বিবাহর খুৎবার মধ্যে আল্লাহ তা’য়ালা স্বয়ং নিজের প্রশংসা করার পর ইরশাদ করেন :
محمد حبيبى ورسولى انى قد زوجت الاشياء ليدلوا به على وحدنية--- يا ادم وياحوا اسكعا جنبى وكلا من ثمرتي-
অর্থ: হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার প্রিয় ও আমার রাসুল। আমি প্রত্যেক জিনিসকে (জীব) জোড়া জোড়া করে তৈরি করে দিলাম, যাতে এসব আমার ওহাদানিয়াতের ওপর দলিল হয়। (মাদারেজুন নবুয়ত)
আরেক বর্ণনায় এসেছে : হযরত আদম আলাইহিস সালাম হযরত হযরত আমেনা রাদিয়াল্লাহুতা’য়ালা আনহার স্বপ্নের মধ্যে আসলেন এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সম্বোধন করে বলেন :
مرحبا بك يامحمد صلى الله تعالى وعليك وسلم
অর্থ: হে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে ধন্যবাদ, স্বাগতম।
হযরত আমেনা রাদিয়াল্লাহুতা’য়ালা আনহা জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কে? আপনার পরিচয় দিন। উত্তর আসল আমি আবুল বশর আদম আলাইহিস সালাম। হযরত আমেনা রাদিয়াল্লাহুতা’য়ালা আনহা বলেন, আপনি কি চান? উত্তরে বললেন :
ابشرى ياامنة فقد حملت بسيد البشر وفخر ربيعة ومضر-
অর্থ: হে আমেনা খাতুন! সুসংবাদ মানবজাতির সরদার ও রবীয়া ও মুযর গোত্রের গৌরবময়ী নুরানী সত্তাকে তুমি ধারণ করছো।
রেয়াজুল মুযাককেরীনের বর্ণনা দিয়ে মায়ারেজুন নবুয়ত কিতাবে হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহুতা’য়ালা আনহু হতে বর্ণনা এসেছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন :
ان ادم عليه السلام لما نظر الى ساق العرش راى مكتوبا عليه لااله الا الله محمد رسول الله من اذنب ذنبا فلا مغفرة ولاتوبة له الابالصلوة على محمد عبده-
অর্থ: হযরত আদম আলাইহিস সালাম আরশের পায়াতে দৃষ্টিপাত করার পর দেখতে পেলেন, সেখানে লেখা আছে لااله الا الله محمد رسول الله এর পর লেখা আছে, যে ব্যক্তি কোন গুনাহ করবে তার জন্য ক্ষমা ও তওবা নেই; যতক্ষণ না আল্লাহ র হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘র উপর দরূদ পড়ে।
২। হযরত নূহ আলাইহিস সালাম‘র মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন:
হযরত নূহ আলাইহিস সালাম‘র উম্মতদের শাস্তি দেওয়ার নিমিত্তে প্লাবনের মাধ্যমে তাদের ধ্বংস করার অভিপ্রায় আল্লাহ পাক তাঁকে ও তাঁর অনুসারীদের হেফাজতের লক্ষ্যে কিশতী বানানোর নির্দেশ দেন। যখন হযরত নূহ আলাইহিস সালাম‘র প্রতি কিশতী তৈরীর হুকুম আসল, তখন কিশতীর কাঠামো তৈরীর জন্য নবীদের সংখ্যানুপাতে ১ লক্ষ ২৪ হাজার কাঠ আসে। অলৌকিভাবে প্রত্যেক কাঠে এক এক নবীর নাম অঙ্কিত ছিল। সেই কাঠসমূহ দিয়ে কিশতী নির্মাণ কাজ শেষ করলে নবীদের নাম মুছে যায়। অতঃপর আল্লাহ র পক্ষ থেকে হযরত নূহ আলাইহিস সালাম‘র প্রতি নির্দেশ আসল যে, আমার (আল্লাহ) নাম নিয়ে শুরু করবে আর আমার বন্ধু (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নাম নিয়ে কিশতীর কাজ শেষ করবে। সে অনুযায়ী শুরু করলে আরও ৪টি কাঠের প্রয়োজন দেখা দেয়। পরদিন ৪টি তক্তা ইসলামের চার খলিফার নামে আসে। সেগুলো সংযুক্ত করে দিলে কিশতী তৈরি হয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে আল্লামা জামী রহ্মাতুল্লাহি আলাইহি বলেন- “আগর নামে মুহাম্মদ রা নহ আ ওয়ারদে সফী আদম, না আদম ইয়া ফতে তুবা নহ নুহ আয গরক্ব নাজজায়না”।
অর্থ: হযরত আদম আলাইহিস সালাম যদি হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘র নাম মোবারকের অছিলা নিয়ে দোয়া না করতেন, তাহলে তাঁর তওবা কবুল হত না, আর নবীপাকের নামের অছিলায় হযরত নূহ আলাইহিস সালাম তুুফান থেকে মুক্তি পেলেন।
হযরত নূহ আলাইহিস সালাম এসে আল্লাহ র হাবীবের প্রতি সালাম জানিয়ে বলেন :السلام عليك ياحبيب الله হযরত আমেনা খাতুন রাদিয়াল্লাহুতা’য়ালা আনহা তাঁর পরিচয় জানতে চাইলে, তিনি বলেন আমি হযরত নূহ আলাইহিস সালাম। আরো বলেন :
ابشرى ياامنة فقد حملت بصاحب النصر والفتوح
অর্থ: সুসংবাদ হে আমেনা! আপনি গর্ভধারণ করেছেন বিজয় এবং বিজয় অর্জনকারীকে।
৩। হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম‘র মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন
হযরত আবু উমামা বাহেলী রাদিয়াল্লাহুতা’য়ালা আনহু হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ হাদিস বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমান হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম একবার স্বপ্নের মধ্যে জান্নাত পরিভ্রমণ করেন। জান্নাতের বিশালতা দেখে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এ বেহেস্ত কার জন্য এবং এটা কার মালিকানাধীন? উত্তর আসল :
اعيدت محمد صلى الله تعالى عليه واله وسلم وامته-
অর্থ: আমি হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর উম্মতের জন্য সৃষ্টি করেছি। অতঃপর হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম বেহেস্তের বাগিচার গোড়ার দিকে অবলোকন করে দেখতে পেলেন,
شهادة ان لا اله الا الله-
দ্বারা গাছের গোড়ালী তৈরি আর কান্ডের প্রতি অবলোকন করে দেখতে পেলেন মুহাম্মদ রাসুলুসাল্লামহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বারা কান্ড তৈরি। আর ফুলের দিকে অবলোকন করে দেখতে পেলেন। سبحان الله والحمد لله দ্বারা ফুলের কাঠামো তৈরি আছে।
হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এ স্বপ্ন তাঁর কওমের নিকট বর্ণনা করলে, তারা তাঁর নিকট হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর উম্মতের পুরো বিবরণ জানতে অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম সেজদায় পড়লেন এবং আল্লাহ র নিকট নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘র শান-মান সম্পর্কে পুর্ণাঙ্গ বিবরণ অবগত হবার জন্য আবেদন জানালেন। অতঃপর হযরত জিব্রাইল আলাইহিস সালাম এসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘র পুর্ণাঙ্গ বিবরণ অবগত করালেন এবং সুসংবাদ দিলেন যে তিনি আপনার ও আপনার বংশধরের মাধ্যমে দুনিয়াতে তাশরীফ আনবেন। এ বর্ণনা শুনে হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম হযরত জিব্রাইল আলাইহিস সালামের মাথায় হাত রেখে বললেন যে :
يارب اجعلنى من امته صلى الله عليه وسلم
হে আল্লাহ ! আমাকে তাঁর উম্মতের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করুন। হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এসেও নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে লক্ষ্য করে বিবি আমেনাকে সালাম দিয়েছেন।
رَبَّنَا وَابْعَثْ فِيهِمْ رَسُولًا مِنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِكَ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَيُزَكِّيهِمْ إِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ (১২৯
৪। হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম‘র মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন:
গর্ভধারণের ৭ম মাসে হযরত ইসমাঈল জবিহুসাল্লামহ এসে আল্লাহ র হাবিবকে বলেন-
السلام عليكم يا امنة من اختاره الله
আমেনা রাদিয়াল্লাহুতা’য়ালা আনহা‘র জবাবে তিনি তাঁর পরিচয় দিয়ে বলেন: ابشرى يا امنة فقد حملت بالنبى الرجيح المليح
অর্থ: সুসংবাদ আমেনা আপনি উজ্জ্বল সর্বক্ষেত্রে প্রধান্য বিস্তারকারী নবীকে গর্ভধারণ করেছেন।কথিত আছে, হযরত ইব্রাহিম খলিলুসাল্লামহ ও ইসমাঈল জবিহুসাল্লামহ যখন খানায়ে কা‘বা নির্মাণ করেন তখন তাঁরা আল্লাহ র নিকট এ নবীর জন্য দোয়া করেছিলেন যা পবিত্র কোরআনে বর্ণিত আছে।
৫। হযরত মুসা আলাইহিস সালাম‘র মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন
অষ্টম মাসে হযরত মুসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর হাবিবকে বললেন,
السلام عليكم ياخير الله
তিনি হযরত আমেনা রাদিয়াল্লাহুতা’য়ালা আনহা‘র নিকট নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন, আমি মুসা আলাইহিস সালাম। তিনি সুসংবাদ দেন,
ابشرى ياامنة فقد حملت بمن ينزل عليك القران.
অর্থ: হে আমেনা! আপনাকে সুসংবাদ। আপনি এমন নবীকে গর্ভধারণ করেছেন, যার উপর কোরআন নাযিল হবে।
৬। হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম‘র মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন ও কিয়াম ঃ
নবম মাসে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম নবীকে এসে সালাম দেন,
السلام عليكم يا خاتم رسول اللهতাঁকে হযরত আমেনা রাদিয়াল্লাহুতা’য়ালা আনহা পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে, তিনি বলেন, আমি ঈসা (আলাইহিস সালাম) এবং সুসংবাদ দেন-
ابشرى ياامنة حملت بالنبى الكرم والرسول المعظم وزال عنك لبؤس والعنا والسقم والالم-
অর্থ: হে আমেনা! আপনাকে সুসংবাদ। আপনি এমন একজন নবীকে গর্ভধারণ করেছেন, যিনি নবীদের মধ্যে মহানবী ও রাসুলদের মধ্যে মহান রাসুল। তাঁর মাধ্যমে আপনার থেকে দুঃখ-দুর্দশা, ভয়-ভীতি, ব্যথা-বেদনা উপশম করেছেন।
وَإِذْ قَالَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ يَا بَنِي إِسْرَائِيلَ إِنِّي رَسُولُ اللَّهِ إِلَيْكُمْ مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيَّ مِنَ التَّوْرَاةِ وَمُبَشِّرًا بِرَسُولٍ يَأْتِي مِنْ بَعْدِي اسْمُهُ أَحْمَدُ فَلَمَّا جَاءَهُمْ بِالْبَيِّنَاتِ قَالُوا هَذَا سِحْرٌ مُبِينٌ (৬
কিতাবে বর্ণিত আছে সকল পয়গম্বর তাঁদের স্ব স্ব উম্মতের নিকট রাসুল আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘র আগমনের শুভ সংবাদ দিয়েছেন”। যেমন হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম এর কথা পবিত্র কোরআনে বর্ণিত আছে অর্থ: আমি আমার পরে এমন একজন রাসুলের আগমনের শুভ সংবাদ দিচ্ছি যার পাক নাম হবে ‘আহমদ’। (সুরা সফ-৬)

ফেরেস্তাদের মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন
রাসুলুসাল্লামহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বেলাদতের রাতে ফেরেস্তাগণ হযরত জিব্রাইল আলাইহিস সালাম‘র নেতৃত্বে হযরত আমেনা রাদিয়াল্লাহুতা’য়ালা আনহা‘র ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সালাত ও সালাম পাঠ করে ছিলেন। তাতে বোঝা যায় যে, মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘সুন্নাতে মালাইকা’। ফেরেস্তাদের মিলাদে আওয়াজ শুনে শয়তান পলায়ন করেছে। অতএব, যারা এ হবে তারা তা হবে।
হযরত সুফিয়া রাদিয়াল্লাহুতা’য়ালা আনহা বলেন, বেলাদতের সাথে সাথেই তাঁর মুখ থেকে উচ্চারিত হচ্ছিল : لااله الا الله আর ফেরেস্তাগণ যে, তাঁকে السلام عليك يا رسول الله বলেছিলেন আমি নিজ কানে তা শুনেছি। (আন নি’মাতুল কুবরা- ৯-১২ পৃষ্ঠা)

হুরদের মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন ও কিয়াম ঃ
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাসাল্লামমের পবিত্র আগমনলগ্নে বেহেশতের হুরেরা হুজুরপাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সংবর্ধনা জানিয়েছেন। হযরত আমেনা রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা হতে বর্ণিত,
قَالَتْ ثُّمَ اَخَذَنَىِ مَايَاْخُذُ النَّسَاءَ فَسَمِعَتُ وَجَيَةً عَظِيْمَةً ثُمَّ رَايْتُ كَانَ جَنَاحُ طَائِرِ اَبْيَضُ قَدْ مَسَحَ عَلَى فُوَاِدىْ فَذَهَبَ عَنِّى الرَّعْبُ وَكُلُّ وَجْعِ اَجِدْهُ ثُمُّ الْتَفَتَّ فَاِذَا اَنَا بِشَرْبَةِ بَيْضَاَء فَتَنَاوَ لْتُهَا فَاِذَاهِىْ اَعْلَى مِنَ الْعَسْلِ فَاَصَابَنِى نُوْرٌعَالِ ثُمَّ رَايْتُ نِسْوَةَ كَالنَّحْلِ طِوَالًا كَاَنَّهُنَّ مِنْ بَنَاتِ عَبْدِ مَنَافِ يُحَدِّقْنَ بِىْ فَبَيْنَمَا اَنَا اَتَعَجَّبُ وَاَقْوَلُ وَاَغُوْثَاهُ مِنْ اَيْنَ عَلِمْنَ فَقُلْنَ بِىْ نَحْنُ اَسْيَةُ اِمْرَاَةُ فِرْعَوْنَ وَمَرْيَمَ اِبْنَةَ عِمْرَانَ وَهَوُلَاءِ مِنَ الْحُوْرِ الْعِيْنِ-
অর্থ: তিনি বলেন, মহিলাদের ন্যায় আমার যখন প্রসব বেদনা শুরু হল, তখন আমি একটি বিকট আওয়াজ শুনলাম। যদ্দরুন আমার মধ্যে ভীতি সঞ্চারিত হয়। অতঃপর আমি দেখলাম যে, একটি ধুসর বরণ পাখির পালক আমার হৃদয় ছুঁয়ে দিল, ফলে আমার সব রকম ভয়-ভীতি ও ব্যথা বিদূরিত হতে লাগল। অতঃপর আমার দৃষ্টি নিবদ্ধ হতেই হঠাৎ দেখলাম যে, আমার সামনে সাদা পানীয় (শরবত) পেশ করা হল এবং আমি তা পান করলাম; যা ছিল মধু থেকে মিষ্ট। এরপর একটি নূরের বৃত্ত আমাকে পরিবেষ্টন করল। আমি দেখলাম, এমন কতগুলো সুন্দরী রমনীদেরকে যাদের গঠন প্রকৃতি লম্বায় খেজুর বৃক্ষ ও আবদে মুনাফের কন্যাদের মতো মনে হচ্ছিল। তারা আমাকে তাদের অঙ্গনে নিয়ে গেল। তখন আমি এ ভেবে হয়রান হয়ে গেলাম যে, এরা কোত্থেকে এল এবং তাঁরা এ বেলাদতের সংবাদ কি করে অবগত হল! তখন তাঁরাই বলল, আমি ফেরআউনের বিবি আছিয়া এবং আমি ইমরান তনয়া মরিয়ম আমাদের সাথে এরা হল জান্নাতের হুর। (আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলম, আনওয়ারে মুহাম্মদী, ২য় খন্ড, ৩৩পৃষ্ঠা)
মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল আলী কাদেরী
কামিল (হাদিস, ফিক্হ) বি.এ (অর্নাস)
সহ -সুপার, কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া কামিল মাদরাসা (মহিলা শাখা)
মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন